আজ আবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল
নিখোঁজ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ
মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো আবারও সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। হরতাল চলাকালে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় দলের
নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা
ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে পরবর্তী কর্মসূচি
নির্ধারণে গতকাল রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি
চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জানা গেছে, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ঘটনায় কঠোর
অবস্থান নিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। এ ইস্যুতে সরকারকে আর কোনো ছাড় দেবেন না
তিনি। এর মধ্যে ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দিলে কিংবা হরতাল চলাকালে
নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ না হলে আরও হরতাল আসতে পারে। ইলিয়াস
আলী নিখোঁজ হওয়ার পর দেশের কোনো মানুষই নিরাপদ নয় উল্লেখ করে সংবাদ
সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার এ নিয়ে নানা নাটক করছে। আমরা মনে করি,
সরকারই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারাই ইলিয়াস আলী গুমের মূল নায়ক। কাতর কণ্ঠে
তিনি বলেন, তার পরিবারের ছোট মেয়েটিও আজ তসবিহ নিয়ে দিন গুনছে বাবা ফিরে
আসবেন। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই। আমরা চাই, ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক
পরিবারের কাছে ফিরে আসুক। নিখোঁজ ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত
আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। দলের এই পরীক্ষিত নেতার 'নিখোঁজে'
পরিবারের সদস্যদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আবেগপ্রবণ
হয়ে পড়েন। ইলিয়াস আলীর নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথে সহিংসতায় দুজন নিহত হওয়া
এবং সারা দেশে নেতা-কর্মী গ্রেফতারের তথ্য জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন,
এভাবে হরতাল করতে সরকার তাদের 'বাধ্য' করেছে। ইলিয়াস আলীকে গুমের পর
সিলেটের বিশ্বনাথে হরতাল চলাকালে বিএনপির দুজন কর্মীকে পুলিশ গুলি চালিয়ে
হত্যা করেছে। অনেক জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীদেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি হরতালে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বাধ্য
হয়েই আমাদের এ পথে যেতে হচ্ছে। তাই জনসাধারণের প্রতি আহ্বান থাকবে, কষ্ট
করে হলেও হরতাল সফল করে সরকারের অন্যায় ও দুঃশাসন রুখে দাঁড়ান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক : রাতে ইলিয়াস আলী ইস্যুতে নতুন কর্মসূচিসহ
দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাতে স্থায়ী কমিটিসহ সিনিয়র নেতাদের
সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর ঘটনার সুরাহা না
হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করা হয় এবং এ
পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী করে অবিলম্বে অপহৃত ইলিয়াসকে ফেরত দেওয়ার
দাবি জানানো হয়।
চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেগম
খালেদা জিয়া। বৈঠকে সিলেটের বিশ্বনাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দলের দুজন
কর্মী নিহত এবং অর্ধশত আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো
হয়। এ জন্য সরকারকেই দায়ী করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন