মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১২

চালক আজমের ভাগ্যে কী ঘটেছে, প্রশ্ন রফিকুলের

চালক আজমের ভাগ্যে কী ঘটেছে, প্রশ্ন রফিকুলের


Tue, Apr 17th, 2012 3:15 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - কেলেঙ্কারির মুখে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানো সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের গাড়িচালক আলী আজম কোথায় কীভাবে আছেন, তা জানানোর দাবি করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “৭০ লাখ টাকাসহ বিজিবির কাছে ধরা পড়া তিনজনকে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গাড়ি চালক আজমকে এখন দেখা যাচ্ছে না। ওই গাড়ি চালক এখন কোথায় আছে। আমরা তা জানতে চাই।”

“তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর”, বলেন তিনি

গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিতের এপিএস ও এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই রাতে ফারুকের সঙ্গে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা রেলে নিয়োগে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।

পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হকও ছিলেন ওই গাড়িতে। তবে ঘটনার পর থেকে গাড়ি চালকের কোনো হদিস পায়নি কেউ। পরিবারও আলী আজমের কোনো খোঁজ জানাতে পারেনি।

এ ঘটনায় ইউসুফ ও এনামুলকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে; চাকরিচ্যুত হয়েছেন ফারুক।

ঘটনার পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন, রাতে টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ওমর ফারুককে ‘ব্ল্যাকমেইল ও হাইজ্যাক’ করার জন্য গাড়ির চালক বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লেবার পার্টির উদ্যোগে দুর্নীতিবাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “আমরা শঙ্কিত। অতীতে যেভাবে খুন হয়েছে, এই গাড়ি চালকের ভাগ্যেও কি তাই ঘটেছে?

“বিজিবি সীমান্তে ৫/১০ বোতল ফেনসিডিল পেলেও মামলা করে। আর এতোগুলো টাকা পাওয়ার পরও কেন মামলা করলো না- তা দেশের মানুষের কাছে আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।”

রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “রেলমন্ত্রীর এপিএসের গাড়িতে টাকাসহ আটককৃতদের কার ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা জাতি জানতে চায়। বিজিবির দায়িত্ব সীমান্ত পাহারা দেওয়া। তারা চোরদের পাহারা দিয়ে রাখতে পারেনি, বর্ডার পাহারা দেবে কীভাবে।”

সহকারীর এই অর্থ কেলেঙ্কারির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে সোমবার রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “রেলমন্ত্রীর দুর্নীতি ধরা পড়ে গেছে। এ অভিযোগ থেকে প্রধানমন্ত্রীরও দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সাবেক যোগাযোগন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ বিশ্বব্যাংকই করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাকে রক্ষা করেছেন।”

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন রফিকুল।

ডিসিসি নির্বাচন

আদালতের আদেশে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন (ডিসিসি) স্থগিতের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের মাধ্যমে এটা বন্ধ করিয়েছে। নির্বাচনে জিততে পারবে না বলেই দলীয় লোকজনকে দিয়ে ডিসিসি পরিচালনার জন্য এই কৌশল নিয়েছে।”

সংবিধান অনুযায়ী নতুন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও সীমানা নির্ধারণের বিধান থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সরকার ও নির্বাচন কমিশন এই বিধান জানার পরও ডিসিসি নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করেছে। এটা তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছে। যাতে আদালত বন্ধ করে দিলে বলবে- আমরা তো নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। আদালত দেয়নি।”

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের একটি রিট আবেদনে সোমবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। তফসিল অনুযায়ী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ২৪ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন