সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১২

বাংলা খবর : আজ আবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল

আজ আবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল


নিখোঁজ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো আবারও সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। হরতাল চলাকালে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তবে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণে গতকাল রাতে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জানা গেছে, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ঘটনায় কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা। এ ইস্যুতে সরকারকে আর কোনো ছাড় দেবেন না তিনি। এর মধ্যে ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দিলে কিংবা হরতাল চলাকালে নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ না হলে আরও হরতাল আসতে পারে। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পর দেশের কোনো মানুষই নিরাপদ নয় উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার এ নিয়ে নানা নাটক করছে। আমরা মনে করি, সরকারই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারাই ইলিয়াস আলী গুমের মূল নায়ক। কাতর কণ্ঠে তিনি বলেন, তার পরিবারের ছোট মেয়েটিও আজ তসবিহ নিয়ে দিন গুনছে বাবা ফিরে আসবেন। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই। আমরা চাই, ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক পরিবারের কাছে ফিরে আসুক। নিখোঁজ ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। দলের এই পরীক্ষিত নেতার 'নিখোঁজে' পরিবারের সদস্যদের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ইলিয়াস আলীর নির্বাচনী এলাকা বিশ্বনাথে সহিংসতায় দুজন নিহত হওয়া এবং সারা দেশে নেতা-কর্মী গ্রেফতারের তথ্য জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, এভাবে হরতাল করতে সরকার তাদের 'বাধ্য' করেছে। ইলিয়াস আলীকে গুমের পর সিলেটের বিশ্বনাথে হরতাল চলাকালে বিএনপির দুজন কর্মীকে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। অনেক জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীদেও গ্রেফতার করা হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি হরতালে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু বাধ্য হয়েই আমাদের এ পথে যেতে হচ্ছে। তাই জনসাধারণের প্রতি আহ্বান থাকবে, কষ্ট করে হলেও হরতাল সফল করে সরকারের অন্যায় ও দুঃশাসন রুখে দাঁড়ান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক : রাতে ইলিয়াস আলী ইস্যুতে নতুন কর্মসূচিসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রাতে স্থায়ী কমিটিসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করা হয় এবং এ পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী করে অবিলম্বে অপহৃত ইলিয়াসকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেগম খালেদা জিয়া। বৈঠকে সিলেটের বিশ্বনাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দলের দুজন কর্মী নিহত এবং অর্ধশত আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ জন্য সরকারকেই দায়ী করা হয়।

বাংলা খবর : পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার দ্বিতীয় দিন

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার দ্বিতীয় দিন


বিএনপি আহূত সকাল-সন্ধ্যা হরতালের দ্বিতীয় দিনে গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ভাঙচুর, গাড়িতে অগি্নসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মিছিলে বাধা ও লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। সিলেটের বিশ্বনাথে পুলিশ-জনতা দীর্ঘস্থায়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন দুজন। ঢাকায় হরতালের সমর্থনে গুলশান এলাকায় মিছিল করার সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সন্ধ্যায় তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর মিছিলে লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। সিলেটে নগরীর বিভিন্ন স্থানে গতকাল ছয়টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল সমর্থকরা। এ সময় অন্তত অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। র্যাব-পুলিশের মারমুখী আচরণে বিক্ষুব্ধ পিকেটাররা বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় ভাঙচুর করে। ময়মনসিংহে পিকেটাররা হামলা চালিয়ে ট্রাক ও রিকশা ভাঙচুর করেছে। নোয়াখালীতে পিকেটাররা ৬টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় ৭ থানায় ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আজ তৃতীয় দিনে আবারও সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি। বিএনপি দাবি করেছে গতকাল সারা দেশে ৩৭১ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আহত হয়েছেন ৭৯৫ জন। ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, নগরীর ৭টি থানায় ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গতকালও ঢাকা থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে লঞ্চ, বিমান ও ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। লঞ্চ-ট্রেনে যাত্রী ছিল কম। নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সংখ্যায় ছিল অনেক কম। তবে টেম্পো, অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল ছিল লক্ষণীয়। রাজধানীর সব সুপার মার্কেট, বিপণি বিতান এবং অধিকাংশ দোকানপাট দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ ছিল। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্লাস হয়নি। সচিবালয়সহ সরকারি অফিসগুলোতে স্বাভাবিক কাজকর্ম চললেও উপস্থিতি ছিল কম। পুঁজিবাজারে লেনদেন ছিল অন্যদিনের তুলনায় কম। এদিকে গতকালও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হরতালের বিরোধিতা করে রাজপথে মিছিল সমাবেশ করে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সকালে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আসে নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।

হরতাল শেষে দুই বাসে আগুন : হরতাল শেষে রাতে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের রিকুইজিশন করা অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। একই সময়ে নগরীর মৎস্য ভবন মোড়ে চিড়িয়াখানা এঙ্প্রেস নামের অন্য একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা।

অবরুদ্ধ বিএনপি কার্যালয় : হরতাল চলাকালে দিনভর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রাখে পুলিশ ও র্যাব। বাইরে প্রবেশ কিংবা ভেতর থেকে কাউকে বের হতে দেওয়া হয়নি। এভাবে ঘিরে রাখাকে সরকারের ফ্যাসিস্ট আচরণ বলে আখ্যায়িত করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কার্যালয় ঘিরে তিন স্তরের বেষ্টনী তৈরি করে পুলিশ। র্যাব ছিল কার্যালয়ের বিপরীত পাশের ফুটপাতে, পাশাপাশি টহলও দেয় তারা। কার্যালয়ের ফটকের সামনেই একটি প্রিজন ভ্যানসহ জলকামান রাখা হয়। মির্জা ফখরুল দিনভর দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান করেন। তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, নাজিমউদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়া পল্টন-মতিঝিল এলাকায় গতকাল বড় ধরনের কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। সকাল ৬টার দিকে পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মতিঝিলে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে পরপর চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের মিছিল : হরতালের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সকাল ৭টায় শহীদ মিনার এলাকায় মিছিল বের করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের হামলায় তিনজন আহত হয় এবং সুমন নামের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হাসান সোয়ান, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিলন এতে নেতৃত্ব দেন।

গুলশানে ১৫ জন আটক : হরতালের সমর্থনে মিছিল করার সময় গুলশান থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমানসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে নয়াপল্টন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে আর পাঁচজনকে আটক করা হয়। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গুলশান-১ নম্বর এলাকার শান্তা গার্মেন্টসের সামনে থেকে সকালে ১০ জনকে আটক করা হয়।

এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সভাপতি সুলতানা আহমেদ, সাবেক এমপি সাহিদা আক্তার রীতা, নারী নেত্রী জেবা খান ও আমেনা খাতুন রয়েছেন। সকালে দলের নেতা-কর্মীরা গুলশান-১ নম্বর এলাকার শান্তা গার্মেন্টসের সামনে জড়ো হলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। পরে তারা গার্মেন্টের পেছনে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে পুলিশ ১০ জনকে তুলে নিয়ে যায়।

টিকাটুলীতে বাস ভাঙচুর : সকালে পশ্চিম মালিবাগে হরতালের সমর্থনে বিএনপি মিছিল বের করলে লাঠিচার্জ করে তা ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। স্থানীয় সফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের সামনে সকাল সোয়া ১০টার দিকে মিছিলটি বের করে রমনা থানা বিএনপি। এর আগে টিকাটুলী রাজধানী সুপার মার্কেট এলাকায় মহিলা দলের একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সংসদ এলাকায় এমপিদের মিছিল : হরতালের সমর্থনে জাতীয় সংসদ ভবন চত্বরে গতকালও মিছিল করেছেন বিরোধীদলীয় এমপিরা। সকাল ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ারের নেতৃত্বে এ মিছিল শুরু হয়। বিরোধী দলের ১৮ এমপি এতে অংশ নেন। পুরো এলাকা ঘুরে এসে আবার দক্ষিণ প্লাজায় এসে শেষ হয় মিছিল। মিছিল-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এমকে আনোয়ার বলেন, ইলিয়াস আলীকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে।

আইনজীবীদের মিছিল : গতকাল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা-কর্মীরা সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী প্রমুখ বক্তৃতা করেন। আইনজীবীরা সমিতির সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান গেট দিয়ে প্রেসক্লাবের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়।

মিরপুরে ককটেল বিস্ফোরণ : মিরপুর ১ নম্বরের বশির উদ্দীন আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গতকাল দুপুর ১২টায় ৩টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দারুসসালাম থানার এএসআই মাহমুদুল হাসান জানান, কয়েকজন হরতাল সমর্থক এ ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ছোট ছোট মিছিল থেকে ৩টি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতে কেউ আহত হননি। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা আড়াইটায় ভিআইপি টাওয়ারের গলিতে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এর আগে মতিঝিল বিআরটিসি বাস কাউন্টারের উল্টোদিকে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের সামনে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ বিষয়ে পুলিশের পেট্রল ইউনিট ইনচার্জ আবুল বাশার জানান, ককটেল ও ভাঙচুরের শব্দ পেয়ে দৈনিক বাংলা মোড় থেকে ছুটে আসি। ততক্ষণে পিকেটাররা পালিয়ে যায়।

মিরপুরে ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া : হরতালের দ্বিতীয় দিনে মিরপুরে ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সকালে মিরপুরের বিভিন্ন সড়কে হরতালের বিপক্ষে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হরতালবিরোধী মিছিল বের করে। সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর থেকে কাফরুল থানা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের উদ্যোগে একটি হরতালবিরোধী মিছিল বের হয়। এ সময় মিরপুর থানা যুবদল হরতালের পক্ষে পাল্টা মিছিল বের করে। মিছিলটি মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের কাছে এগিয়ে এলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় মিছিলকারীরা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সামনে একটি মিনিবাস ভাঙচুর করে। বেলা সাড়ে ১১টায় মিরপুর ১ নম্বর সেকশন থেকে মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আরেকটি হরতালবিরোধী মিছিল বের হয়। মিছিলটি মিরপুরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। কিছুক্ষণ পর মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের চাইনিজ রেস্টুরেন্টের সামনে পর পর চারটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। হরতালের কারণে ব্যাংক, বীমা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। তবে ভোর থেকে সিটি সার্ভিসের কিছু বাস ও মিনিবাস চলাচল করেছে।

৭টি ককটেল উদ্ধারসহ দুজন গ্রেফতার : রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের এরোপ্লেনের গলি থেকে গতকাল ভোরে সাতটি ককটেল বোমা উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় ককটেল বহনের অভিযোগে ওবায়েদ (২২) ও এরশাদ (৪৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযান পরিচালনাকারী গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার শহিদুল্লাহ বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবিকে জানান তারা হরতালে ব্যবহারের উদ্দেশে ওই ককটেলগুলো সংগ্রহ করেছিল।

পুরনো চেহারায় বিএনপির কার্যালয় : হরতাল চলাকালে গতকালও ভোর থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয় ঘিরে রাখে পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বাইরে থেকে যেমন প্রবেশ করতে পারেননি, তেমনি কার্যালয় থেকেও বের হতে পারেননি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দুই পাশে প্রিজন ভ্যান, জলকামান ছাড়াও পুরোদিনই বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস রাখা ছিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তিন স্তরে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে।

বিজয়নগর মোড় ও ফকিরাপুল মোড়ে কাঁটাতারের ব্যারিকেড রাখা হলেও যান চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হয়। সকাল সোয়া ৬টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, আন্তর্জাতিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলমসহ বিএনপির নেতারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসতে থাকেন। তবে সকাল ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশেই একটি ককটেল বিস্ফোরণের পরই হরতালের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিএনপির দফতর সম্পাদক রিজভী আহমেদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া কয়েকজন নেতা-কর্মী মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আবদুল মতিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হক নাসিরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বাংলামোটর মোড় থেকে বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশন অফিসের কাছাকাছি যেতেই পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারেও অনুরূপ একটি মিছিল বের হলে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

বাংলা খবর : হ্যাকারদের কবলে জেনারেল মইন

হ্যাকারদের কবলে জেনারেল মইন


যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের ইমেইল আইডি হ্যাক হয়েছে। হ্যাকাররা তার ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্নজনের কাছে অর্থসাহায্য চাচ্ছেন। ওয়ান-ইলেভেনের আলোচিত-সমালোচিত এই সেনাপ্রধান এ নিয়ে রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছেন। মইন উ আহমেদ নিজেই ২২ এপ্রিল বার্তা সংস্থা এনাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন জেনারেল মইন বলেন, 'দুর্বৃত্তরা আমার ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে সুহৃদ সবার কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে। তারা আমার অসহায়ত্বের কথা বলে অর্থসাহায্য চাচ্ছে এবং চাইতে পারে। এমনকি তারা ভাইরাসও ছড়াচ্ছে, যা কম্পিউটারের ক্ষতি করতে পারে। সবার প্রতি অনুরোধ, এমন ইমেইল সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন।'ইমেইল আইডি হ্যাক হওয়ার বিষয়টি জেনারেল মইন পরিচিত সবাইকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, 'আমার চিকিৎসা চলছে এবং আমি কারও কাছে অর্থসহায়তা চাইনি। শুধু দেশবাসীর দোয়া চাই।' কয়েকদিন আগেই ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার স্বপন সাহার ইমেইল আইডি হ্যাক করে এভাবে অর্থসহায়তা চাওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা পত্রিকা সাপ্তাহিক ঠিকানাও হ্যাকারদের কবলে পড়ে।

বাংলা খবর: ইলিয়াস 'নিখোঁজ'

ইলিয়াস 'নিখোঁজ'
উদ্ধারের নামে চলছে আইওয়াশ


বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর খোঁজ ছয় দিনেও মেলেনি। তার অবস্থান সম্পর্কে এখনো অন্ধকারেই রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অথচ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, র্যাব-পুলিশ সদর দফতর, থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতার খোঁজে তারা ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছেন। তবে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র বলছেন, ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের অভিযান স্রেফ আইওয়াশ। ইতিপূর্বে পূবাইলসহ যেসব স্থানে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়েছে, তার প্রতিটিই সাজানো নাটক। এদিকে, রূপসী বাংলা হোটেলে এম ইলিয়াস আলীর গাড়ির পেছনের সেই সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল আরোহীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তার সন্ধানে র্যাব বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে বনানী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার। বনানীর রাস্তায় পাওয়া যায় ইলিয়াস আলীর গাড়িটি। এরপর থেকেই দাবি করা হয়, ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করতে পুলিশের গুলশান বিভাগ, বনানী থানা, ডিবি ও র্যাব মাঠে নেমেছে। কিন্তু তারা কী করছে, কোথায় কোথায় অভিযান চালাচ্ছে, তা তারা বলতে পারছে না। ইলিয়াস আলীর সন্ধানের দাবিতে গোটা দেশ ক্রমশ উত্তাল হয়ে উঠছে। আজ মঙ্গলবারও তৃতীয় দিনের মতো দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতাল করবে বিএনপি। বিএনপি বলছে, যতদিন পর্যন্ত ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করা না হবে, ততদিন কঠোর কর্মসূচি চলতেই থাকবে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক বলেন, ইলিয়াসকে উদ্ধারে সরকারের সংস্থাগুলো আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। যে কোনো উপায়ে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর জিডির সূত্র ধরেই তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি। সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব কটি সংস্থাই ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ ছয় দিনেও তারা জানতে পারেনি ইলিয়াস আলী কোথায় কী অবস্থায় রয়েছেন। এতে করে সরকারের শীর্ষ মহলের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা বেকায়দায় পড়েছে। তবে ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পুলিশ, ডিবি ও র্যাব পৃথক পৃথক বৈঠক করে। বৈঠকগুলোতে নির্দেশ দেওয়া হয়, যে কোনো প্রকারই হোক ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করতে হবে। তার নিখোঁজ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনা হচ্ছে। গতকাল ইলিয়াসের 'সিলেট হাউজ', বনানী সাউথ পয়েন্ট স্কুলের আশপাশের এলাকা, রূপসী বাংলা হোটেলে তদন্তকারীদের তৎপরতা দেখা গেলেও তারা কী করছে, তা স্পষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি মহল ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে উড়ো তথ্য দিচ্ছে। কারা এসব তথ্য দিচ্ছে, তা গোয়েন্দারা তদন্ত করে দেখছে।

বাংলা খবর: ফেসবুকে তোলপাড়

ফেসবুকে তোলপাড়


সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে গতকাল সব কিছুকে ছাপিয়ে 'হট টক' হয়ে ওঠে সোহেল তাজের এমপি পদ থেকে পদত্যাগের বিষয়টি। আলোচনার ঝড় তোলেন সাইটটি ব্যবহারকারীরা। গতকাল বেলা ১টার দিকে টমসম বেগম নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সোহেল তাজের পদত্যাগের ব্যাপারে একটি পোস্ট দেওয়ার ৫৫ মিনিটের মধ্যেই ৩৮ জন পোস্টটি শেয়ার করেন। কমেন্টস করেন ৭৩ জন। পোস্টটি পছন্দ করেন ১৫৩ জন। অধিকাংশ ব্যবহারকারী তার এ পদত্যাগের বিষয়টিকে অত্যন্ত সাহসী ও নজিরবিহীন পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে তাকে অভিনন্দিত করেন। এ ছাড়া ব্লগাররাও এ নিয়ে যার যার ব্লগে বিভিন্ন পোস্ট দেন।বাবুল হোসেন নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার মন্তব্যে লেখেন, এর মাধ্যমে তিনি তার বাবা তাজউদ্দীন আহমদের তাজ আরও উপরে তুললেন। একজন সত্যিকারের নেতার পক্ষেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। সাইফুল ইসলাম লেখেন, পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি সরকারের ব্যর্থতা, অন্যায় ও অবিচারের প্রতিবাদ করলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা নজিরবিহীন। শাহ রাজীব লেখেন, তিনিই একজন প্রকৃত নেতা যার মধ্যে ক্ষমতার লোভ নেই। ফাহাদ আবদুল্লাহ লেখেন, দেশে যে এখনো দু-একজন সৎ ও নীতিবান রাজনীতিবিদ আছেন সোহেল তাজের পদত্যাগই তার প্রমাণ। হাফিজ সরকার লেখেন, তিনি স্বচ্ছ রাজনীতিবিদের প্রতিচ্ছবি। এ থেকে আমাদের মন্ত্রী-এমপি-রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কাইয়ুম সরকার বলেন, সোহেল তাজ তার বাবার মতোই মহান নেতা, এটাই আবার প্রমাণ হলো। এভাবে একের পর এক মন্তব্য ও পোস্টে গতকাল ফেসবুকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন সোহেল তাজ।

বাংলা খবর: ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে বিশ্বনাথ

ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে বিশ্বনাথ
* থানায় হামলা * ইউএনও অফিসে আগুন * নিহত ২ * ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক

শাহ্ দিদার আলম নবেল ও সাইফুল ইসলাম বেগ, সিলেট অফিস

বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ঘটনায় ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে তার নিজ উপজেলা বিশ্বনাথ। বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষে গতকাল গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন এক যুবদল কর্মীসহ দুজন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। ক্ষুব্ধ হরতালকারীরা বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ ভবনে আগুন লাগিয়ে দেন। তারা উপজেলা কর্মকর্তার গাড়িসহ ১০টি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা কমপ্লেঙ্রে সব কটি সরকারি দফতরের আসবাব ও কাগজপত্রাদিও পুড়িয়ে দেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় দুই শতাধিক রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্বনাথ থানার ওসি, ১৫ পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা সভাপতি ইলিয়াস আলীর উদ্ধারের দাবিতে দলীয় নেতা-কর্মী ছাড়াও রাস্তায় নেমে এসেছেন সাধারণ মানুষ। হরতাল চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সকাল থেকে উপজেলা সদরের বাসিয়া সেতুর ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ। অপর দিকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরের পাশর্্ববর্তী নকিখালি ও জানাইয়া এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় পুরো উপজেলায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করে। বেলা ২টার দিকে পৃথক মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা রামপাশা ও জানাইয়া সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশও পাল্টা জবাব দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ পিছু হটলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বাসিয়া সেতু থেকে থানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জোটবদ্ধ হয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গুলিতে মনোয়ার মিয়া নামে এক যুবদল কর্মী গুরুতর আহত হন। তাকে ওসমানী হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ছাড়া জামেয়া মোহম্মদিয়া মাদ্রাসার পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ আরেক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সংঘর্ষে বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদন্ত) চান মিয়া, সেকেন্ড অফিসার এনাম আহমদ, এসআই সালাহ উদ্দিনসহ ১৫ পুলিশ সদস্য এবং বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এর মধ্যে অন্তত ১০ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপজেলা কমপ্লেঙ্ েহামলা চালান। তারা বিভিন্ন সরকারি অফিসে ভাঙচুর করেন। অফিস থেকে আসবাব, কাগজপত্রাদি ও কর্মকর্তাদের সাতটি মোটরসাইকেল কমপ্লেঙ্রে আঙিনায় জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেন। হরতাল সমর্থকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনেও হামলা চালান। এ সময় তারা ইউএনওর গাড়িও পুড়িয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অন্তত ২০০ রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে। বিকাল ৪টার দিকে বিপুলসংখ্যক র্যাব-পুলিশ-বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সিলেট নগরী : গতকাল সকাল থেকে সিলেট নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। কিন্তু র্যাব-পুলিশের মারমুখী অবস্থানের কারণে তারা মিছিল-সমাবেশ করতে পারেননি। দুপুরের দিকে চৌহাট্টা, বালুচর, যতরপুর, উপশহর ও মানিকপীর রোড এলাকায় পাঁচটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন হরতালকারীরা। এ সময় অর্ধশত গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বেলা ১টা থেকে নগরীতে র্যাব-পুলিশের টহল জোরদার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আরও মারমুখী হয়ে উঠলে হরতালকারীরা পিছু হটেন। বিকালে আবারও তারা রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের চেষ্টা চালান। এ সময় নগরীর শিবগঞ্জে ২০-২৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও বালুচরে আরেকটি গাড়িতে আগুন দেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া বিকালে মোটরসাইকেলে আসার পথে মেজরটিলায় ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের থামানোর চেষ্টা করে পুলিশ। নির্দেশ না মানায় তাদের লক্ষ্য করে শর্টগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইকরাম হোসেন, জিলু ও ছাত্রদল নেতা বজলু আহত হন। শিবগঞ্জ থেকে আটক করা হয় ছাত্রদল নেতা কাওছার আহমদ রানা ও সাজু আহমদকে। সকালে হরতালের সমর্থনে নগরীর মিরাবাজার থেকে একটি মিছিল বের করে ছাত্রদল। মিছিলটি নাইওরপুল পয়েন্টে এলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়ে আবার মিরাবাজার ফিরে যায়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম, দিনার খান হাসু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল আহাদ খান জামাল প্রমুখ। বেলা ১১টার দিকে আম্বরখানা থেকে বিএনপি মিছিল বের করলে চৌহাট্টা সিভিল সার্জন অফিসের সামনে বাধা দেয় পুলিশ। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের শামীম, আরিফুল হক চৌধুরী, সালেহ আহমদ খসরু, মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।

কোম্পানীগঞ্জ : বেলা ১১টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ কালাসাদেক বিজিবি ক্যাম্পের পাশ থেকে মিছিল বের করেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা দুটি ট্রাক ভাঙচুর করলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

কানাইঘাট : সকালে কানাইঘাট সদরে বিএনপি মিছিল বের করলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

বালাগঞ্জ : উপজেলার কালীবাড়ি বাজার, আদিত্যপুর, মোরারবাজার, নতুনবাজার, বোয়ালজুড়, ইলাশপুর, গহরপুর মাদ্রাসাবাজার, আজিজপুর বাজার, জনকল্যাণ বাজার, ওসমানীগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা কামরুল হুদা জায়গীরদার, গেদাই মিয়া, ফারুক মিয়া প্রমুখ।

ওসমানীনগর : সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি সভাপতি সৈয়দ মোতাহির আলী, আবদাল মিয়া, ইমরান রব্বানী, ফখরুল ইসলাম ফারুক, আনহার মিয়া প্রমুখ।

দক্ষিণ সুরমা : দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন পয়েন্টে পিকেটিং ও মিছিল করেন বিএনপি কর্মীরা। সমাবেশে বক্তব্য দেন এ টি এম ফয়েজ, তাজরুল ইসলাম তাজুল, কোহিনুর আহমদ, মকসুদ আহমদ প্রমুখ। দক্ষিণ সুরমা থেকে ২৩ জনকে আটক করে পুলিশ।

গোয়াইনঘাট : সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা সিরাজউদ্দিন, লুৎফুল হক খোকন প্রমুখ।

জৈন্তা : হরতাল চলাকালে উপজেলা সদরে মিছিল করে বিএনপি। সমাবেশে বক্তৃতা করেন এম এ মালিক মানিক, মুহিবুল হক প্রমুখ।

জকিগঞ্জ : সোমবার জকিগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র হরতাল পালিত হয়। হরতাল চলাকালে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা বদরুল হক খসরু, জাহাঙ্গীর শাহ চৌধুরী হেলাল, ইসমাঈল হোসেন সেলিম।

সিলেটে ১৪ দল নেতাদের উদ্বেগ : ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিলেটের ১৪ দল নেতারা। রবিবার রাতে সভা করে তারা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ইলিয়াস আলীর সুস্থ অবস্থায় ফিরে এসে রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়ার কামনা করেন ১৪ দলের নেতারা। একই সঙ্গে তারা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে সরকারকে সহযোগিতা করতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি, জেলা জাসদ সভাপতি কলন্দর আলী, সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ, ন্যাপের সৈয়দ আবদুল হান্নান, ওয়ার্কার্স পার্টির সিকন্দর আলী, গণতন্ত্রী পার্টির ব্যারিস্টার আরশ আলী, সাম্যবাদী দলের ধীরেন সিংহ প্রমুখ।

মঙ্গলবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১২

ফেইসবুকে বিনামূল্যে অফার

ফেইসবুকে বিনামূল্যে অফার

সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেইসবুক সম্প্রতি অফার নামের নতুন একটি সুবিধা চালু করছে যার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ফ্যানদের নিউজ ফিডে বিভিন্ন অফার দিতে পারবেন বিনামূল্যে। খবর মার্কেটিং ল্যান্ড ডটকমের।

সূত্র জানিয়েছে, নতুন এই সেবার ফলে, যে কোনো কোম্পানির তৈরি অফারগুলো ব্যবহারকারীর ফেইসবুক পেজে বা নিউজ ফিডে দেখা যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো রেস্টুরেন্ট যদি বিশেষ কোনো ছাড় অফার করে ফেইসবুকের মাধ্যমে, তাহলে রেস্টুরেন্টটির পেইজ যারা লাইক করেছেন তাদের নিউজ ফিডে ওই অফারটি দেখা যাবে। ব্যবহারকারীরা ‘গেট অফার’ বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে অফারটি পাবেন।

মার্কেটিং ল্যান্ড আরো জানিয়েছে, অফার দাবি (ক্লেইম) করলে ফেইসবুক ওই কোম্পানির পক্ষ থেকে একটি ইমেইল পাঠাবে ব্যবহারকারীর ইমেইল ঠিকানায়। এরপর সংশ্লিষ্ট স্থানে ওই ইমেইলটি দেখালে অথবা প্রিন্ট করে নিয়ে গেলেই অফারটি পাওয়া যাবে। অর্থাৎ, রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে ফেইসবুক থেকে আসা ইমেইলটি দেখালেই ছাড় পাওয়া যাবে।

ফেইসবুক জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বিনামূল্যেই পেইজ অ্যাডমিনরা বিভিন্নরকম অফার দিতে পারবেন। তবে বেশি ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছুতে এবং অফার সংখ্যার সীমাবদ্ধতা কাটাতে বিজ্ঞাপনও দেয়া যাবে।

চশমা হবে আগামী প্রজন্মের গেইমিং ডিভাইস

চশমা হবে আগামী প্রজন্মের গেইমিং ডিভাইস

সম্প্রতি গেইমস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ভালভ জানিয়েছে, তাদের একটি টিম অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস নিয়ে গবেষণা করছে গেইমিংয়ের অভিজ্ঞতা জানার জন্য। খবর ডিজিটাল ট্রেন্ডস-এর।

উল্লেখ্য, অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস হচ্ছে এক ধরনের চশমা যা কম্পিউটারের মতোই কাজ করে। সম্প্রতি গুগল তাদের সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম গুগল প্লাসে ‘প্রজেক্ট গ্লাস’ নামের এক ধরনের অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাসের প্রোটোটাইপ ডিভাইস দেখিয়েছে। যার মাধ্যমে চশমার মধ্যেই সোশাল নেটওয়ার্কিং, ভয়েস ও ভিডিও চ্যাট, গুগল ম্যাপস ডিরেকশন, ছবি তোলা ও শেয়ার করার সুবিধা আনা হয়েছে। মূলত এর পরই অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ শুরু হয়েছে প্রযুক্তি বিশ্বে।

এই ধরনের চশমা এর আগে দেখানো হয়েছিল সাই-ফাই সিনেমা টার্মিনেটর-এ।

এবার লেফট ফর ডেড, কাউন্টার স্ট্রাইক, হাফ লাইফ ইত্যাদি জনপ্রিয় গেইমের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভালভও গবেষণায় নেমেছে এই অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস নিয়ে। অবশ্য ভালভের ব্লগে প্রকাশিত এক পোস্টে ডেভেলপার মাইকেল আবরাশ জানিয়েছেন, তাদের এখনই অগমেন্টেড রিয়েলিটি সমৃদ্ধ কোনো গেইমিং চশমা বের করার পরিকল্পনা নেই।

তবে ডিজিটাল ট্রেন্ডস জানিয়েছে, যদি সাফল্যের মুখ দেখা যায়, তবে আগামী প্রজন্মের গেইমিং ডিভাইসগুলো হয়তো আর এক্সবক্স বা প্লেস্টেশনের মতো টিভির সঙ্গে যুক্ত কনসোল হবে না; বরং ঠিক চোখের সামনের চশমাটিই হয়ে উঠবে গেইমিং ডিভাইস। তবে এজন্য উৎসুক সবাইকে ভালভের গবেষণার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।



উইন্ডোজ ৮-এর বিস্তারিত জানালো মাইক্রোসফট

উইন্ডোজ ৮-এর বিস্তারিত জানালো মাইক্রোসফট


সম্প্রতি মাইক্রোসফট প্রথমবারের মতো তাদের পরবর্তী অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৮ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংস্করণকে ‘উইন্ডোজ ৮’ বলেই ডাকা হবে বলেও জানিয়েছে মাইক্রোসফট। খবর ম্যাশএবল-এর।


সূত্রমতে, উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেমটি ৩২ ও ৬৪ বিট দু’ধরনের হার্ডওয়ারেই চলবে। তবে প্রধানত চার ধরনের উইন্ডোজ ৮ বাজারজাত করা হবে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।


‘রেগুলার উইন্ডোজ ৮’ থাকছে একেবারেই সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য। এতে কম্পিউটিংয়ের দৈনন্দিন যাবতীয় কাজ করা যাবে।


‘উইন্ডোজ ৮ প্রো’ থাকছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ডেভেলপার এবং প্রযুক্তিমনস্ক মানুষের জন্য। এতে অ্যাডভান্সড কিছু সুবিধা যেমন ফাইল এনক্রিপ্ট করা, ভার্চুয়াল হার্ড ড্রাইভ থেকে বুট করা ইত্যাদি থাকছে। এছাড়াও মিডিয়া সেন্টার পিসিতে ব্যবহারের জন্য উইন্ডোজ ৮ প্রো এবং মিডিয়া প্যাক অ্যাড-অনের প্রয়োজন পড়বে যা সাধারণ উইন্ডোজ ৮-এ দেয়া থাকবে না বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।


‘উইন্ডোজ ৮ আরটি’ ট্যাবলেট ডিভাইসে চালানোর উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। আরটি বলতে কী বোঝানো হচ্ছে সে ব্যাপারে মাইক্রোসফট পরিষ্কার কিছু না জানালেও ম্যাশএবল ধারণা করছে ‘রান-টাইম’ বোঝাতেই আরটি যোগ করা হয়েছে। তবে এআরএম চিপের জন্য তৈরি এই উইন্ডোজের সংস্করণ আলাদা কিনতে পাওয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট ট্যাবলেট ডিভাইসেই জুড়ে দেয়া থাকবে উইন্ডোজ ৮ আরটি। সেই সঙ্গে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল, পাওয়ারপয়েন্ট এবং ওয়াননোটের বিনামূল্যের একটি সংস্করণও প্রি-ইনস্টলড থাকবে উইন্ডোজ ৮ আরটি-চালিত ট্যাবলেট ডিভাইসে।


এই তিনটি ছাড়াও আরও বড় কাজের জন্য ‘উইন্ডোজ ৮ এন্টারপ্রাইজ’ সংস্করণ রয়েছে বলেও জানিয়েছে মাইক্রোসফট। এতে উইন্ডোজ ৮ প্রো-এর সব সুবিধার পাশাপাশি আইটি প্রফেশনালদের জন্য বাড়তি কিছু সুবিধাও যোগ করা থাকবে; যেন একাধিক কম্পিউটার বা নেটওয়ার্কিং আরও সহজে করা যায়। এছাড়াও চীনসহ বেশ কিছু দেশের জন্য স্থানীয় ভাষাতেও একটি লোকাল-ল্যাঙ্গুয়েজ সমৃদ্ধ উইন্ডোজ ৮ বাজারে ছাড়বে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উইন্ডোজ ৮-এর নতুন এই পরিকল্পনার মাধ্যমে বাজারকে আরও বড় করে তুলছে মাইক্রোসফট। একইসঙ্গে যার যে কাজে কম্পিউটার প্রয়োজন, তাকে অপারেটিং সিস্টেমের ঠিক সেই সংস্করণ (রেগুলার, প্রো, আরটি অথবা এন্টারপ্রাইজ) ব্যবহার করতে বাধ্য করাও মাইক্রোসফটের পরিকল্পনার অংশবিশেষ বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

তবে কবে নাগাদ সার্বিকভাবে প্রস্তুত উইন্ডোজ ৮ অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আসবে, সে সম্পর্কে এখনো কিছু জানায়নি মাইক্রোসফট।

অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ মীরার নামে

অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ মীরার নামে

পাকিস্তানি অভিনেত্রী মীরার বিরুদ্ধে অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগ গ্রহণ করেছে সেদেশের আদালত। জনৈক মুহাম্মদ ইসলামের করা অভিযোগটি গ্রহণ করেছেন এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট ও সেশন জজ। এছাড়াও মীরার নামে তিনি পুলিশি তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন। খবর প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার।

মীরার গর্ভপাত নিয়ে সাম্প্রতিক খবরের সূত্র ধরে মুহম্মদ ইসলাম অভিযোগে জানিয়েছেন, গর্ভপাত করার পরেও মীরা নিজেকে কুমারী দাবি করছেন। তার আচরণ দেখে মনে হচ্ছে গর্ভপাতটি অবৈধ এবং অনৈসলামিক।

তাই আদালতের কাছে ইসলাম আবেদন করেছেন, মীরার বিরুদ্ধে হুদ্দদ অর্ডিনেন্সের আওতায় মামলা গ্রহণ করার জন্য। ১৯৭৯ সালে প্রণীত এই বহুল আলোচিত আইনটিতে অবৈধ যৌন সম্পর্ক ও মাদক গ্রহণের জন্য কঠোর সাজার উল্লেখ আছে।

মীরার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটির শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৩ এপ্রিল।

কয়েক সপ্তাহ যাবত পাকিস্তানি মিডিয়া অভিযোগ করছে, অভিনেত্রী মীরা গর্ভপাত করেছেন। কিন্তু বাগদত্ত পাইলট নাভিদ শেহজাদের সঙ্গে সম্পর্কিত ওই অভিযোগ অস্বীকার করছেন তিনি।

এদিকে মীরার কথিত স্বামী ব্যবসায়ী আতিকুর রেহমানও আদালতে কেস ঠুকেছেন বাগদত্ত শেহজাদের নামে। যদিও মিডিয়া জানিয়েছে, মীরার সঙ্গে বিয়েতে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন শেহজাদ।

বিয়ে করবেন এলিজাবেথ ও শেন

বিয়ে করবেন এলিজাবেথ ও শেন

বৃটিশ অভিনেত্রী এলিজাবেথ হার্লে ও অস্ট্রেলিয়ান সাবেক তারকা ক্রিকেটার শেন ওয়ার্ন বিয়ে করবেন আগামী বছর। বর-কনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই বিয়ে পর্ব চলবে বৃটেন ও অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত। খবর ইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিস-এর।

এ বিষয়ে এলিজাবেথ বলেছেন, ‘মনে হয়, আমরা নিজেদের সম্পূর্ণ চিনতে পেরেছি। শেনের সঙ্গে থাকতে পেরে নিজেকে অসম্ভব সুখী মনে করছি আমি। অনেক মিল আছে আমাদের দুজনের মধ্যে। যদিও আমরা দুজন ক্যারিয়ার ও ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে দুই ভুবনের বাসিন্দা। তবুও একসঙ্গে থাকতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পাই। আর আমার ক্ষেত্রে সেটা অনেক বেশিই।’

তবে নিজেদের সম্পর্ককে ‘প্রায় অসম্ভব’ বলেই অভিহিত করেছেন ওয়ার্ন। যদিও এলিজাবেথের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনিও বলেছেন, ‘আমি মনে করি, আমরা নিজেদের এইমাত্র খুঁজে পেয়েছি এবং একে সম্পূর্ণ চেনাও বলা যেতে পারে।’

নিজেদের নিয়ে আত্মতুষ্টির কথা বলার ফাঁকে ওয়ার্ন বলেছেন, ‘আমি জানি, এলিজাবেথের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধায় অনেকেই অবাক হয়েছেন এবং অনেকেরই আগ্রহের সৃষ্টিও হয়েছে এতে। এর কারণ, আমরা দু’জন দুই পেশার মানুষ। কিন্তু আমরা দুজনেই এমন পরিবার থেকে এসেছি যেখানে গাঢ় পরিবারিক বন্ধন আছে।’

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মালিকানা দ্বন্দ্ব মেটাতে ৩ মাস সময় ৩ বিশ্ববিদ্যালয়কে

মালিকানা দ্বন্দ্ব মেটাতে ৩ মাস সময় ৩ বিশ্ববিদ্যালয়কে


Wed, Apr 11th, 2012 9:55 pm BdST
ঢাকা, এপ্রিল ১১- মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এই সময়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসন করতে না পারলে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়াসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাদের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, ইবাইস, অতীশ দীপংকর ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসন করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষকে বুধবার বিকালে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

“নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” যোগ করেন তিনি।

এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসন করতে গত ৩০ জানুয়ারি মৌখিক নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার চিঠি পাঠানো হল।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক আতফুল হাই শিবলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।”

তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩৫ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেবেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৩৫ ধারার ৭ উপধারায় বলা আছে, কোনো কারণে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা দেখা দিলে কিংবা উহার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে চ্যান্সেলর কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে প্রয়োজনীয় আদেশ ও নির্দেশ দিতে পারবেন। এ বিষয়ে চ্যান্সেলরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

বর্তমানে দেশে ৬৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

গেইল ঝড়ে ব্যাঙ্গালোরের জয়

গেইল ঝড়ে ব্যাঙ্গালোরের জয়


Wed, Apr 18th, 2012 12:23 am BdST

ঢাকা, এপ্রিল ১৮  - ক্রিস গেইলের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের সুবাদে ওয়ারিয়র্সকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ৫ খেলায় এটি ব্যাঙ্গালোরের দ্বিতীয় জয় অন্যদিকে সমান খেলায় পুনের দ্বিতীয় হার।

ব্যাঙ্গালোরের এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রবিন উথাপ্পার অর্ধশতকের সুবাদে ৬ উইকেটে ১৮২ রান করে পুনে ওয়ারিয়র্স। জবাবে শেষ বলে সৌরভ তিওয়ারীর ছক্কায় ৪ উইকেটে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এক প্রান্তে গেইল স্বাভাব সুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও অন্য প্রান্তে তিলেকারতেœ দিলশান (৪), মায়াঙ্ক আগারওয়াল (৯) ও বিরাট কোহলির (১৬) দ্রুত বিদায়ে ৭২ রানেই ৩ উইকেট হারায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।

চতুর্থ উইকেটে তিওয়ারীর সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন গেইল। ষোড়শ ওভারের চতুর্থ বলে আশীষ নেহরার বলে গেইল (৮১) বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরলে বড় একটা ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। গেইলের ৪৮ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ৮টি ছক্কা।

পঞ্চম উইকেটে এবি ডি র্ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৪ ওভার ২ বলে ৫৯ রানের অবিচ্ছ্ন্নি জুটি গড়ে ব্যাঙ্গালোরকে দারুণ জয় এনে দেন তিওয়ারী। আশীষ নেহরার করা শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২১ রান প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। সেই ওভারে এ দুজন তুলে নেন ২৪ রান।

ম্যাচ শেষে তিওয়ারী অপরাজিত থাকেন ৩৬ রানে। আর ডি ভিলিয়ার্স ১৪ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে করেন ৩৩ রান।


এর আগে জেসি রাইডারের (৩৪) সঙ্গে উথাপ্পার ৬৩ রানের উদ্বোধনী জুটি পুনে ওয়ারিয়র্সকে ভালো সূচনা এনে দেয়। অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ৬ রান করলেও তার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে উথাপ্পা ৪৫ রানের আরেকটি ভালো জুটি গড়েন।

৪৫ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৬৯ রান করে উথাপ্পা দলীয় ১১৭ রানে সাজঘরের পথ ধরলেও অতিথিদের রানের চাকা থেমে যায় নি।

মারলন স্যামুয়েলসের ৩৪ রানের সুবাদে দুশ রানের কাছাকাছি স্কোর গড়ে অতিথিরা।

গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পেছাল


গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন পেছাল


Tue, Apr 17th, 2012 2:20 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে কি না- তা ২ মে জানাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এ বিষয়ে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন নির্ধারিত থাকলেও প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল নতুন এই দিন ঠিক করে দেন।

গোলাম আজমকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে তার আইনজীবীদের আবেদনের শুনানি গত ২৯ মার্চ শেষ হয়।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১১ জানুয়ারি গোলাম আযমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ওই দিনই তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়; তারপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ৫২ দফা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন বিভাগ।

সাবেক এই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে নানা জায়গায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আল বদর, আল শামস, পাইওনিয়ার ফোর্স, মুজাহিদ বাহিনী নামে পাকিস্তানপন্থী সংগঠন গঠন করা হয়। এসব সংগঠনকে অস্ত্র সরবরাহ করা এবং এ বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে সুপারিশ করার দায়িত্বও ছিল তার।

একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা শুরুর পর খাজা খায়রুদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১৪০ সদস্যের যে শান্তি কমিটি হয়, তার তদারকিতে গঠিত কমিটির ছয় জনের এক জন ছিলেন গোলাম আযম।

এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও প্রকাশ্যে তদবির চালান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আযম।

১৯৭১ থেকে ৭ বছর লন্ডনে অবস্থান করার পর ১৯৭৮ এ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে তিনি আবার বাংলাদেশে আসেন।

শিশুমৃত্যুর হার আরো কমেছে


শিশুমৃত্যুর হার আরো কমেছে


Tue, Apr 17th, 2012 12:49 pm BdST
 

ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - বাংলাদেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার গত চার বছরে আরো কমে এসেছে।

দেশের জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতির নিয়ে ২০১১ সালের ষষ্ঠ জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষার (বিডিএইচএস) প্রাথমিক প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, বর্তমানে পাঁচ বছর বয়স শ্রেণীতে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫৩, যেখানে ২০০৭ সালে এই হার ছিল ৬৫।

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য-৪ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মধ্যে এই হার হাজারে ৪৮ এ নামিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

১৯৯৩ সালে প্রথম জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, সে সময় পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার ছিল হাজারে ১৩৩।

বর্তমানে এক বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫২ থেকে কমে ৪৩ হয়েছে। ২০০৭ সালে যেখানে জন্মের এক মাসের মধ্যে প্রতি হাজারে ৩৭টি শিশু মারা যেত, বর্তমানে এই হার কমে হয়েছে হাজারে ৩২।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছরের নিচে মারা যাওয়া শিশুদের ৬০ শতাংশেরই মৃত্যু হয় জন্মের এক মাসের মধ্যে।

প্রসূতিসেবার উন্নতি, পরিবারের আকার নিয়ন্ত্রণে থাকা এবং জন্মবিরতির বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং দুই সন্তান জন্মের মধ্যে ব্যবধান বাড়ায় শিশুমৃত্যুর হার কমে আসছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

বর্তমানে ৩২ শতাংশ প্রসূতি সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর সহায়তা পান। ২০০৭ সালে ২১ শতাংশ প্রসূতি এ সেবা পেতেন।

জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত চার বছরে উর্বরতার হার কমেছে, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের হার বেড়েছে, প্রসূতিসেবার মানও বেড়েছে।

তবে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। গত চার বছরে এ ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে নামমাত্রই।

বাংলাদেশে ১৯৯৩-৯৪ সাল থেকে প্রতি তিন বা চার বছর পরপর এই সমীক্ষা চালানো হয়ে আসছে। স্বাস্থ্য, জনসংখ্য ও পুষ্টি খাত উন্নয়ন পরিকল্পনার (এইচপিএনএসডিপি) ১৮টি বিশেষ লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি আসছে কি না- তার মূল্যায়নে ২০১১ সালের সমীক্ষার ফল ব্যবহার করা হবে।

আন্তর্জাতিক জনমিতি ও স্বাস্থ্য সমীক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডের আইসিএফ ইন্টারন্যাশনাল অফ ক্যালভারটনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় পরিচালিত এ সমীক্ষার তত্ত্বাবধান করে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এনআইপিওআরটি)।

এবারের সমীক্ষার জন্য সারা দেশের ১৭ হাজার ১৪১টি পরিবারের ১২ থেকে ৪৯ বছর বয়সী বিবাহিতা নারী ও ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী পুরুষের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। গত বছর ৮ জুলাই থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং সেগুলো একত্রিত করা ও পর্যালোচনার জন্য ২৩ জুলাই থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাস সময় লাগে।

‘২০২১ সালে দারিদ্র্যের হার হবে ১৩.৫ শতাংশ’


‘২০২১ সালে দারিদ্র্যের হার হবে ১৩.৫ শতাংশ’


Tue, Apr 17th, 2012 9:41 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - দেশে দারিদ্র্যের হার আগামী নয় বছরের মধ্যে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে সরকার।

বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপরেখায় (২০১০-২০২১) এ ঘোষণার পাশাপাশি আগামী তিন বছরে (২০১৫ সাল) এ হার ২২ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে ধরা হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘পারস্পেকটিভ প্ল্যান অব বাংলাদেশ (২০১০-২১): মেকিং ভিশন ২০২১ এ রিয়েলিটি’ শিরোনামের এ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয় মঙ্গলবার।

পরিকল্পনার সার সংক্ষেপে বলা হয়, “উল্লেখযোগ্য অনেক অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশ চার কোটি ৭০ লাখ দারিদ্র সীমার নিচের লোকসংখ্যাসহ এখনো দরিদ্র দেশ। দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ।

“সমন্বিত প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে দারিদ্যের হার নেমে আসবে ২২ দশমিক ৫ এবং ২০২১ সালে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশে।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১০ সালের হিসাবে দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ।

উচ্চতর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন ও শিল্পখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে- দারিদ্র্য নিরসনে প্রধান কৌশল বলে পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া অন্য কৌশলগুলো হলো- দরিদ্র্যদের উৎপাদন উপকরণে খাসজমি, সার, সেচ, বিদ্যুতে মালিকানা দেওয়া, সব ক্ষেত্রে উৎপাদনের হার বৃদ্ধি, পশ্চাদপদ অঞ্চলগুলোয় অবকাঠামো সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও এর বলয় বৃদ্ধি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ব্যাপক প্রসার এবং ক্ষুদ্র ঋণের বিস্তার।

২০০৯ সালের এপ্রিলে ষষ্ঠ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকে ভিত্তি হিসাবে ধরে দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২০২১ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ষষ্ঠ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।

২০২১ সালে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর আগে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে এই পরিকল্পিত ও সমন্বিত উন্নয়ন অর্জনের তাগিদ থেকেই সরকার দীর্ঘমেয়াদি এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে।

এটা হবে বর্তমান সরকারের নেওয়া প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, যা রূপরেখা হিসাবেই প্রণীত হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকারের নেতৃত্বে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা, অর্থসচিব মোহাম্মদ তারেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ইকবাল মাহমুদ, পরিকল্পনা সচিব ভূইয়া সফিকুল ইসলামসহ ১১ সদস্যের একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেন।

এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় জনগণের অংশিদারিত্ব ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসকরণ, কার্যকরী সরকার ব্যবস্থা ও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নিশ্চিতকরণ, বিশ্বায়ন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ, উন্নয়ন ও নাগরিক কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন, সুদৃঢ় অবকাঠামো নির্মাণসহ নগর সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো উপশম এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিত্য-নতুন উদ্ভাবন প্রক্রিয়াকে বেগবান করার কথা বলা হয়েছে।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে ২০১৫ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) ৮ শতাংশ এবং ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে পরিকল্পনায়; বর্তমানে এ হার সাড়ে ৬ শতাংশ।

২০২১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে দু’হাজার ডলারে উন্নীত করার কথাও রয়েছে প্রেক্ষিত পরিকল্পনায়।

২০১৫ সাল নাগাদ জিডিপি’র ৩২ দশমিক ১ শতাংশ সঞ্চয় ও ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ বিনিয়োগ এবং ২০২১ সালে তা যথাক্রমে ৩৯ দশমিক ১ ও ৩৮ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

পরিকল্পনায় ২০২১ সাল নাগাদ মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার একটি সহনীয় পর্যায়ে অর্থ্যাৎ ৫ দশমিক ২ শতাংশে স্থির রাখার কথা বলা হয়েছে।

বেকারত্বের হার ২০১৫ সালে ২০ শতাংশে এবং ২০২১ সালে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এ প্রেক্ষিত পরিকল্পনায়।

সাগর-রুনি হত্যা: দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তলব


সাগর-রুনি হত্যা: দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তলব


Tue, Apr 17th, 2012 3:11 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ‘অসন্তুষ্ট’ আদালত গোয়েন্দা পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে তলব করেছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

তলব করা ওই দুই কর্মকর্তা হলেন- মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মনিরুল ইসলাম ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম।

মামলার প্রাথমিক বিবরণ, সাক্ষীদের জবানবন্দি, মামলার যাবতীয় গোপনীয় নথিসহ তাদেরকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছারাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। ওই ঘটনায় ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ ব্যক্তিদের আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে, যার তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

তবে খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভেকেট মনজিল মোরসেদের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি রুল জারি করে।

গত ২১ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে এবং ২২ মার্চ পুলিশ মহাপরিদর্শক পক্ষ থেকে তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে ওই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে দুটি ‘অগ্রগতি প্রতিবেদন’ জমা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আলতাফ হোসেন বলেন, “প্রতিবেদন যাচাই করে দেখা যায় দুটির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তাই এফিডেভিট করে আজ প্রতিবেদন দুটি আদালতে দাখিল করি।”

শুনানি শেষে আদালত দুই কর্মকর্তাকে তলবের আদেশ দেয় বলেও জানান তিনি।

আলতাফ হোসেন বলেন, “আদালত কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কারণ পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তদন্তে অগ্রগতির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়নি। ডিসি ডিবি ও এই মামলার আইওকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে মামলার কার্যক্রম সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। তাদেরকে মামলা সংক্রান্ত গোপনীয় নথি, গোয়েন্দা প্রতিবেদনসহ যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেছেন। এগুলো আদালত দেখবেন। তারপরই পরবর্তী পর্যবেক্ষণ দিবেন।”

“প্রতিবেদন দেখে আদালত আরো বলেছে, ফলাফল কিছুই নেই,” যোগ করেন তিনি।

অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, “আদালত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন, তদন্তের ফলাফল জিরো। এ ধরনের চাঞ্চল্যকর একটা মামলায় উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়োগ না করে একজন পরিদর্শককে দিয়ে তদন্ত করানো হচ্ছে।”

প্রতিবেদন আগে এলেও তা না দেওয়ায় আদালতকে অনুযোগ করেন এই আইনজীবী।

তিনি বলেন, “আমি আদালতকে বলেছি, এই মামলায় দেশবাসী উদ্বিগ্ন। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই উদ্বিগ্ন। এরপরও কেন তদন্ত কর্মকর্তার ওই প্রতিবেদনে কোন অগ্রগতি নেই? যারা এই তদন্ত করছে, তারা কেন তদন্তকে এগিয়ে নিতে পারছে না। তাদের পুলিশ বিভাগেও থাকা উচিত নয়।”

রোমানা মঞ্জুরের ঘটনায় আদালতের আদেশের চার ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলেও এই চাঞ্চল্যকর মামলায় কেন কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, সে বিষয়েও আদালত প্রশ্ন তুলেছে বলে জানান মনজিল মোরসেদ।

সাগর-রুনি হত্যা


সাগর-রুনি হত্যা
ডাকাতি ও শত্রুতা ধরে তদন্ত করছে পুলিশ


Tue, Apr 17th, 2012 8:41 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭- সাংবাদিক দম্পতি হত্যার পরপরই ‘পূর্বপরিকল্পিত’ ঘটনার কথা বললেও ডাকাতি ও ব্যক্তিগত শত্রুতাকে ভিত্তি ধরে তদন্ত করছে পুলিশ।

হত্যাকাণ্ডের দুইমাস পর আদালতের বাধ্যবাধকতায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে পুলিশ তাদের এই সন্দেহের কথা প্রকাশ করে।

মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আলতাফ হোসেন।

গত ২১ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে এবং ২২ মার্চ পুলিশ মহাপরিদর্শক পক্ষ থেকে এই কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আলতাফ হোসেনের কার্যালয়ে ‘অগ্রগতি প্রতিবেদন’ দুটি জমা পড়েছিল।

তবে উভয় প্রতিবেদনই ‘অভিন্ন’ বলে জানিয়েছেন আলতাফ হোসেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলামের অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে; প্রথমত সংঘবদ্ধ কোনো ডাকাতদল হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা এবং দ্বিতীয়ত সাগর-রুনির ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা পেশাগত শত্র“তায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কিনা।’

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছারাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিক সাগর সরওয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সাংবাদিক মেহেরুন রুনি।

ওই দিনই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামি ধরার প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।

পরে ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ ব্যক্তিদের আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা হলেও এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। মামলাটি এখন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করছে।

১৪ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলা নগর থানায় রুনির ভাইয়ের করা একটি আবেদনের উদ্বৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ওই বাড়ি থেকে ঘটনার পর রুনির ব্যবহৃত ১০/১১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ১১০০ ইউরো, দুটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায় নাই। এ ছাড়া নগদ কোন অর্থও পাওয়া যায় নাই, যা পাওয়া স্বাভাবিক ছিলো।’

এ জন্য বাড়িটির দারোয়ান, কেয়ারটেকার, গৃহকর্মী, ওই ভবনের বাসিন্দা, বাড়ির মালিক, সম্ভাব্য অতিথি, ভবনের আশেপাশের বাসিন্দা, সাগর ও রুনির কর্মস্থলের সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব সবার জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

বাদীর পরবর্তী সম্পূরক বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, পেশাদার অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ করে জড়িত থাকার ব্যাপারে সাক্ষ্য ও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।

এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ ব্যাপারে গুপ্তচর নিয়োগের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অপরাধ উদঘাটনের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আসামি গ্রেপ্তারসহ মামলার রহস্য উদঘাটনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

আলামত উদ্ধার

প্রতিবেদনে ঘটনাস্থল থেকে আলামত উদ্ধার প্রসঙ্গে বলা হয়, ১৯টি আলামত জব্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, একটি লোহার তৈরি বটি, একটি স্টিলের ছুরি, একটি ছুটির বাট, একটি বেগুনি রঙের কামিজ ও একটি সিনথেটিক কালো রঙের কামিজ, যেগুলো রক্তমাখা অবস্থায় ছিলো।

এ ছাড়া দরজার ভাঙা একটি তালাও উদ্ধার করা হয়।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সোহেল মাহমুদকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সাগর ও রুনির মৃত্যু হয়েছে। রুনির ক্ষেত্রে ধর্ষণের (সেক্সুয়াল ইন্টাকোর্স) চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদীর প্রতিক্রিয়া

রুনির ভাই নওশের রোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অগ্রগতি প্রতিবেদন নিয়ে আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করায় এই মামলার ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের হতাশা আরো বাড়ল।”

প্রকৃত ঘটনা কোনোদিনই উদঘাটন হবে না- এমন আশঙ্কা করছেন তিনি।

ডেসটিনি: তিন সদস্যের কমিশন হচ্ছে


ডেসটিনি: তিন সদস্যের কমিশন হচ্ছে


Tue, Apr 17th, 2012 9:46 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের অবৈধ ব্যাংকিং তদন্তে যুবকের মতোই তিন সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।

মুহিত বলেন, “এটা হবে যুবকের মতোই তিন সদস্যের কমিশন। এই কমিশন প্রথমে একটি প্রতিবেদন দেবে। পরে ওই প্রতিবেদনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে কমিটির সদস্যের নাম ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

কমিশন গঠনের মাধ্যমে যুবকের মতোই পুরো প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “না, দীর্ঘায়িত নয়। এটা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। এখানে অনেক বেশি মানুষের স্বার্থ জড়িত। সে কারণে যথাযথ তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ের কোনো সুরাহা হবে না।”

তবে কতো দিনে কমিশন প্রতিবেদন জমা দেবে- সে বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী।

এর আগে ডেসটিনির ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেন বাণিজ্য সচিব গোলাম হোসেন। প্রতিবেদনে ডেসটিনির ঘটনা তদন্তে ওই কমিশন গঠনের সুপরিশ করা হয়েছে।

মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ডেসটিনির নানা অনিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের পর গণমাধ্যমে ডেসটিনি প্রসঙ্গে নেতিবাচক খবর প্রকাশ হয় চলতি মাসের শুরুর দিকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ‘নিয়ম-বহির্ভূত কর্মকাণ্ড’ তদন্তে একটি কমিটি করে সরকার।

অবশ্য ডেসটিনি তার বিরুদ্ধে আনা অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

গত ৭ এপ্রিল অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মুনাফার লোভ দেখিয়ে নিরীহ মানুষকে প্রতারণা বন্ধে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি যুবকের মতো ডেসটিনির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেদিনই তিনি কমিশন গঠনের কথা জানান।

অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক) বন্ধ হয়ে যাওয়ার ছয় বছর পরও বিনিয়োগ করা অর্থ ফেরত পাননি প্রতারিত গ্রাহকরা। ডেসটিনির বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ ওঠায় যুবকের গ্রাহকদের পাওনার বিষয়টিও ফের আলোচনায় এসেছে।

দেশে আবার সোয়াইন ফ্লু


দেশে আবার সোয়াইন ফ্লু


Tue, Apr 17th, 2012 10:24 pm BdST
 
ফাইল ছবি


ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - দু’বছর পর আবারো বাংলাদেশের মানুষের শরীরে সোয়াইন ফ্লু’র সংক্রমণ ঘটেছে।

রোগতত্ত্ব, রোগ গবেষণা ও রোগ নিয়ন্ত্রণ ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উত্তরাঞ্চলের এক জেলায় নার্সিং হোস্টেলে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

ডা. মাহমুদুর বলেন, “পরীক্ষা করে অন্তত ১৪ জনের শরীরে এইচ১এন১ ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।”

তবে এ নিয়ে এ মুহূর্তে তারা উদ্বিগ্ন নন উল্লেখ করে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, “বিষয়টা হলো দুবছর পর ভাইরাসটি ফিরে এসেছে।”

দেশের মানুষকে এতে আতঙ্কিত না হয়ে বরং এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

স¤প্রতি কুড়িগ্রাম নার্সিং ইন্সটিটিউটে ৪২ জন শিক্ষার্থী অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হলে জেলার সহকারী সিভিল সার্জন ঢাকায় সংবাদ দেন। এ খবরে আইইডিসিআর’র ছয় সদস্যের একটি দল গত ১২ এপ্রিল কুড়িগ্রাম যায়।

ওই শিক্ষার্থীরা জ্বর, কাশির পাশাপাশি মাঝেমাঝে বমি করছিলেন বলে জানান আইইডিসিআর পরিচালক।

তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ায় তারা সবাই সেরে ওঠেন।”

এইচ১এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ঘটে ২০০৯ সালে মেক্সিকোয়। তারপর তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ওই বছরের ১১ জুন এইচ১এন১ ভাইরাস জ্বরকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তি প্রথম সনাক্ত হন ২০০৯ সালের ১৮ জুন। এর ফলে ওই সময় দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ডা. মাহমুদুর জানান, ওই সময় বাংলাদেশে ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আট জন মারা যান।

তবে তখন অনেকেরই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “চিকিৎসকদের এই বিষয়টি স্মরণ রাখা উচিৎ। এই মৌসুমে জ্বরাক্রান্ত রোগীর সেবায় এন্টি-ভাইরাস ব্যবহার করা যেতে পারে।”

এই ভাইরাস আক্রান্তকে পৃথকভাবে রেখে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন রোগ নিয়ন্ত্রণ ইন্সটিটিউটের পরিচালক মাহমুদুর। যেখানে সেখানে থুতু ফেলা থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

কুড়িগ্রামে নার্সিং হোস্টেলে যাওয়া আইইডিসিআর’র প্রতিনিধিদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “এই রোগ একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে, তাই সেখানে দ্রুত এর বিস্তার ঘটে।”

কুড়িগ্রামে এইচ১এন১ ভাইরাসে আক্রান্তরা ছোটো কক্ষে বিছানা ভাগাভাগি করে থাকতেন বলে জানান ডা. মাহমুদুর।

চালক আজমের ভাগ্যে কী ঘটেছে, প্রশ্ন রফিকুলের

চালক আজমের ভাগ্যে কী ঘটেছে, প্রশ্ন রফিকুলের


Tue, Apr 17th, 2012 3:15 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - কেলেঙ্কারির মুখে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানো সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএসের গাড়িচালক আলী আজম কোথায় কীভাবে আছেন, তা জানানোর দাবি করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “৭০ লাখ টাকাসহ বিজিবির কাছে ধরা পড়া তিনজনকে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গাড়ি চালক আজমকে এখন দেখা যাচ্ছে না। ওই গাড়ি চালক এখন কোথায় আছে। আমরা তা জানতে চাই।”

“তাকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর”, বলেন তিনি

গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিতের এপিএস ও এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই রাতে ফারুকের সঙ্গে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা রেলে নিয়োগে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল।

পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হকও ছিলেন ওই গাড়িতে। তবে ঘটনার পর থেকে গাড়ি চালকের কোনো হদিস পায়নি কেউ। পরিবারও আলী আজমের কোনো খোঁজ জানাতে পারেনি।

এ ঘটনায় ইউসুফ ও এনামুলকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে; চাকরিচ্যুত হয়েছেন ফারুক।

ঘটনার পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন, রাতে টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় ওমর ফারুককে ‘ব্ল্যাকমেইল ও হাইজ্যাক’ করার জন্য গাড়ির চালক বিজিবি সদর দপ্তরে ঢুকে পড়ে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লেবার পার্টির উদ্যোগে দুর্নীতিবাজ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “আমরা শঙ্কিত। অতীতে যেভাবে খুন হয়েছে, এই গাড়ি চালকের ভাগ্যেও কি তাই ঘটেছে?

“বিজিবি সীমান্তে ৫/১০ বোতল ফেনসিডিল পেলেও মামলা করে। আর এতোগুলো টাকা পাওয়ার পরও কেন মামলা করলো না- তা দেশের মানুষের কাছে আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।”

রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “রেলমন্ত্রীর এপিএসের গাড়িতে টাকাসহ আটককৃতদের কার ফোনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তা জাতি জানতে চায়। বিজিবির দায়িত্ব সীমান্ত পাহারা দেওয়া। তারা চোরদের পাহারা দিয়ে রাখতে পারেনি, বর্ডার পাহারা দেবে কীভাবে।”

সহকারীর এই অর্থ কেলেঙ্কারির পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে সোমবার রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “রেলমন্ত্রীর দুর্নীতি ধরা পড়ে গেছে। এ অভিযোগ থেকে প্রধানমন্ত্রীরও দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সাবেক যোগাযোগন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ বিশ্বব্যাংকই করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাকে রক্ষা করেছেন।”

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ মামলা করা হবে বলেও মন্তব্য করেন রফিকুল।

ডিসিসি নির্বাচন

আদালতের আদেশে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন (ডিসিসি) স্থগিতের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের মাধ্যমে এটা বন্ধ করিয়েছে। নির্বাচনে জিততে পারবে না বলেই দলীয় লোকজনকে দিয়ে ডিসিসি পরিচালনার জন্য এই কৌশল নিয়েছে।”

সংবিধান অনুযায়ী নতুন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগেই ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও সীমানা নির্ধারণের বিধান থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সরকার ও নির্বাচন কমিশন এই বিধান জানার পরও ডিসিসি নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করেছে। এটা তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছে। যাতে আদালত বন্ধ করে দিলে বলবে- আমরা তো নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। আদালত দেয়নি।”

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের একটি রিট আবেদনে সোমবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। তফসিল অনুযায়ী ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে ২৪ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান।

মৃধা ও এনামুলকে দুদকে তলব

মৃধা ও এনামুলকে দুদকে তলব


Tue, Apr 17th, 2012 5:04 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ ঘটনায় রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধা ও জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হককে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার রেলভবনে রেলের মহাপরিচালক আবু তাহের বলেন, “দুদক থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি নোটিস মঙ্গলবার হাতে পেয়েছি। আগামীকাল (বুধবার) তাদের হাজির হতে হবে।”

মৃধা ও এনামুলের বিরুদ্ধে বিভাগীর মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ওই ঘটনার তদন্তে আবু তাহেরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে অর্থ পাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই রাতে ফারুকের সঙ্গে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা রেলে নিয়োগে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিলো। পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হকও ওই গাড়িতে ছিলেন।

ঘটনার জের ধরে এরই মধ্যে জিএম ইউসুফ মৃধা ও কমান্ডেন্ট এনামুলকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ওমর ফারুককে চাকরিচ্যুত করা হয়। পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতের ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী।

এ বিষয়ে রেল মহাপরিচালক আবু তাহের বলেন, “রেলে লোক নিয়োগ করতে হবে, কারণ রেলে জনবলের অভাবে কাজে সমস্যা হচ্ছে। নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে কিনা- তা তদন্তে দুটি কমিটি করা হয়েছে।”

সুরঞ্জিতকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ নয়: দুদক


সুরঞ্জিতকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ নয়: দুদক


Tue, Apr 17th, 2012 7:59 pm BdST
 


ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় পদত্যাগী রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পারিবারিক সম্পত্তির বিষয়ে তাকে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করছে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

পারিবারিক সম্পত্তি ও ছেলের ব্যবসা বিষয়ে পদত্যাগী মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলে মঙ্গলবার একটি বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত খবর সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে তদন্ত কর্মকর্তা। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়টিতে যতটুকু অনুসন্ধান করা হয়েছে তাতে অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে সাবেক রেলমন্ত্রীর কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।”

প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের কেউ কেউ ভিন্ন উদ্দেশ্য থেকে প্রশ্ন করেন। তখন কিছু একটা বলতে হয় বলেই মহাপরিচালক ওভাবে বলেছেন।”

বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান দুদক প্রধান।

অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা উদঘাটনে ১২ এপ্রিল দুজনের একটি তদন্ত দল গঠন করে কমিশন। বুধবার তদন্তকারীরা চাকরিচ্যুত এপিএস ও রেলের দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) এম এইচ সালাউদ্দিনকে উদ্ধৃত করে মঙ্গলবার পত্রিকাটিতে বলা হয়, ‘সাবেক রেলমন্ত্রীর ছেলের টেলিকম ব্যবসা ও অন্যান্য পারিবারিক ব্যবসা সম্পর্কে প্রয়োজন হলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’

তবে মহাপরিচালক সালাউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেভাবে আমাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে আমি তা বলিনি। কেন আমাকে উদ্ধৃতি করে এসব বলা হবে। আমি তার ছেলের প্রসঙ্গে কথা বলেছি; সাবেক মন্ত্রীর বিষয়ে কোন মন্তব্য করিনি।”

গত ৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিতের এপিএস ও এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনার রেশ ধরে সোমবার দায়িত্বে ইস্তফা দেন মন্ত্রী।

ওই গাড়িতে ফারুকের সঙ্গী পূর্বাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হককে বরখাস্ত করা হয়েছে; চাকরিচ্যুত হন ফারুক।

সুরঞ্জিত দপ্তরবিহীন মন্ত্রী

সুরঞ্জিত দপ্তরবিহীন মন্ত্রী


Tue, Apr 17th, 2012 8:43 pm BdST
 
ঢাকা, এপ্রিল ১৭ - ব্যক্তিগত সহকারীর ‘অর্থ কেলেঙ্কারীর’ দায় নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণার ৩০ ঘণ্টার মাথায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে পুনরায় মন্ত্রী করেছে সরকার; তবে তাকে কোনো দপ্তর দেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার রাতে সরকারি এক ঘোষণায় বলা হয়, “১৯৯৬ সালের কার্যপ্রণালী বিধির ৩(৪) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলবো না।”

“আমার অবস্থা বোঝার চেষ্টা করুন এবং সহায়তা করুন,” যোগ করেন তিনি।

গত ৯ এপ্রিল গভীর রাতে রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ব্যক্তিগত সহকারী ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়ি থেকে ‘বিপুল পরিমাণ’ টাকা উদ্ধারের খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে চাপে পড়েন মন্ত্রী। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ নানা মহল থেকে তার পদত্যাগের দাবি ওঠে।

এ পরিস্থিতিতে ঘটনার সপ্তাহ খানেকের মাথায় সোমবার দুপুর ২টা নাগাদ এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন সুরঞ্জিত।

এর আগে রোববার রাত ৯টা নাগাদ সুরঞ্জিতকে ডেকে নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যে গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয় বলে খবর প্রকাশ হয় তাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্বাঞ্চল) ইউসুফ আলী মৃধা ও জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হকও ছিলেন। ঘটনার পর ফারুককে বরখাস্ত এবং রেলের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিতে মৃধা উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিলেও, সাবেক রেলমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ফারুক বাহকের মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য পাঠান। ফারুক ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব ইতিমধ্যে জব্দ করেছে সরকার।

পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন গত ২৮ নভেম্বর। স্বাধীনতার পর থেকে অধিকাংশ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। শেখ হাসিনার গত সরকারে তিনি মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন সুরঞ্জিত।

দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সুরঞ্জিত দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।

সোমবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১২

দায় নিয়ে সুরঞ্জিতের পদত্যাগ


দায় নিয়ে সুরঞ্জিতের পদত্যাগ


Mon, Apr 16th, 2012 2:32 pm BdST


ঢাকা, এপ্রিল ১৬ - ব্যক্তিগত সহকারীর ‘অর্থ কেলেঙ্কারির’ দায় নিজের কাঁধে নিয়ে রেলমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

এক সপ্তাহ ধরে নানা নাটকীয়তার পর সোমবার রেলভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ‘অব্যাহতি’ নেওয়ার এই ঘোষণা দেন পাঁচ মাস আগে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়া বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতা।

এপিএস ওমর ফারুক তালুকদারের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার পর চাপের মধ্যে থাকা সুরঞ্জিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এই ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

পরে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গাড়ি থেকে জাতীয় পতাকা নামিয়ে রেলভবন ছাড়েন তিনি। গত ২৮ নভেম্বর মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর গাড়িতে তোলা জাতীয় পতাকা নিয়েই তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে বাকপটু হিসেবে পরিচিত সুরঞ্জিতকে প্রায় ২০ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে বেশ বিমর্ষ দেখা যায়। তার স্বভাবসুলভ হাসিমুখও এদিন দেখা যায়নি।

তবে বাংলাদেশের প্রায় সব সংসদেই প্রতিনিধিত্বকারী এই সংসদ সদস্য বলেছেন, মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও ৫০ দশকের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটছে না, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করে রাজনীতিতে ফিরবেন তিনি।

সুরঞ্জিত হলেন বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেন। এর আগে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগপত্র দেন।

নিজের সিদ্ধান্তেই পদত্যাগ- সুরঞ্জিত এই কথা বললেও তার পদত্যাগ চেয়ে আসা বিএনপি ঘোষণা আসার পর বলেছে, আওয়ামী লীগের এই নেতাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে ‘বাধ্য’ করা হয়েছে।

অন্যদিকে দলীয় নেতার এই সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, “তিনি কোনো রকম অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না।

“তার এই পদত্যাগ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অতীতে আর কোনো রাজনীতিবিদ ব্যর্থতার দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে এভাবে পদত্যাগ করেননি।”

যে ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিতকে পদত্যাগের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে এই ঘটনার শুরু গত ৯ এপ্রিল রাতে।

ওই রাতে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের ফটকে সুরঞ্জিতের এপিএস, এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা ওমর ফারুকের গাড়িতে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়ার ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই রাতে ফারুকের সঙ্গে ৭০ লাখ টাকা পাওয়া যায়, যা রেলে নিয়োগে ঘুষ হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। পূর্বাঞ্চল রেলের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা এবং জিআরপির ঢাকার কমান্ডেন্ট এনামুল হকও ছিলেন ওই গাড়িতে।

ঘটনাটি নিয়ে সারাদেশে গুঞ্জন শুরু হলে পরদিন রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সুরঞ্জিত এই ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি করার কথা জানালেও এতে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন তিনি; যদিও সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া ওই গাড়ির আরোহীদের বক্তব্য ছিল, তাদের গন্তব্যস্থল ছিল রেলমন্ত্রীর বাড়ি।

এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় চলতে থাকলে রোববার জিএম ইউসুফ মৃধা ও কমান্ডেন্ট এনামুলকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ওমর ফারুককে চাকরিচ্যুত করার কথা জানান সুরঞ্জিত।

বিষয়টি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পৃক্ত করার কথাও জানান তিনি। মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ওমর ফারুক ও তার স্ত্রী মারজিয়া ফারহানার ব্যাংক হিসাব (অ্যাকাউন্ট) জব্দ করার নির্দেশও দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিএনপিসহ বিভিন্ন দল থেকে ঘটনার শুরু থেকে পদত্যাগের দাবি উঠলেও তা রোববার বিকাল পর্যন্ত নাকচ করে আসছিলেন সুরঞ্জিত।

তবে রোববার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আসার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। তখন থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়, পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী। সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তার অনুপস্থিতি আরো জোরালো করে সেই গুঞ্জনকে।

‘রেলমন্ত্রী’ পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন-এমন খবরে গণমাধ্যমকর্মীরা সকাল থেকেই রেল ভবনে জড়ো হতে থাকেন। সংবাদ সম্মেলন বেলা ১২টায় শুরুর কথা থাকলেও মন্ত্রী রেলভবনে আসেন পৌনে ১টার পর, গাড়িতে তখন ছিল জাতীয় পতাকা।

নিজের কক্ষে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর রেলের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু তাহের ও রেলসচিব ফজলে কবিরকে নিয়ে মন্ত্রী সম্মেলন কক্ষে পৌঁছান ১টা ১০ মিনিটে।

“আজ আমি বেশি কথা বলতে পারব না। কোনো প্রশ্ন নেব না। প্রশ্নের উত্তরও দেব না,” মন্ত্রী হিসেবে শেষ সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন রাজনৈতিক অঙ্গনে সবসময় সরব সুরঞ্জিত।

জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় দায়িত্ব একান্তই তার, দল বা সরকারের নয়। ঘটনায় কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও গণতন্ত্রকে ‘আরো শক্তিশালী’ করতে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

“গত রোববার প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর আমি প্রায় ঘণ্টাকাল তার সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অব্যাহতির অভিপ্রায় ব্যক্ত করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন।”

পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “গত ৯ই এপ্রিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বস্তরে একটি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। নানা কথা হচ্ছে। যেহেতু এই ঘটনায় আমার এপিএস ও রেল মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিল, তাই এই ঘটনার দায়দায়িত্ব আমার মন্ত্রণালয়ের ওপরই পড়ে।”

৫০ বছরেরও বেশি সময় রাজনীতিতে যুক্ত এই নেতা আফসোসের সুরে বলেন, “চল্লিশ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই নানাভাবে উপকৃত হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ৪০ বছরে কেউ আত্মত্যাগ করতে আসে নাই।”

“আমি আমার জীবন সায়াহ্নে এসে এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছি,” বলেন সুরঞ্জিত; এই কেলেঙ্কারির পর কয়েকদিন আগেও তিনি বলেছিলেন, “এতদিন তীর ছুড়ে এসেছি, এখন নিজেই তীরবিদ্ধ। তীরের যন্ত্রণা যে কী, তা বুঝতে পারছি। কী যাতনা বিষে বুঝিবে সে কীসে,,,,,।”

এই অর্থ কেলেঙ্কারির সঙ্গে নিজে কোনোভাবে জড়িত নন দাবি করে সুরঞ্জিত বলেন, “দেশের বুদ্ধিজীবী ও আমার দলের ২/১ জন ছাড়া বেশিরভাগই প্রশ্ন করছেন, আমি দায়িত্বে থাকলে তদন্ত প্রভাবমুক্ত থাকবে কি না।...গণতন্ত্রের মাত্রাকে আরো শক্তিশালী করতে এই ঘটনায় আমার দায়িত্ব নিতে হবে।... এই ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা না থাকার পরও আমি অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

তার এই উপলব্ধিকে সাধুবাদ জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানও সাংবাদিকদের বলেছেন, “উনি (সুরঞ্জিত) পদে থাকায় তদন্ত সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। পদত্যাগ করায় এখন আর তদন্ত নিয়ে সমস্যা দেখছি না।”

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দলে সংস্কারের দাবি তুলে দলে অনেকের বিরাগভাজন হওয়া সুরঞ্জিত পদত্যাগের সঙ্গে এটাও বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা তার ‘যাত্রাবিরতি’।

“নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে রাজনীতিতে স্বচ্ছভাবে ফিরে আসব,” বলেন সংসদীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞ এই নেতা।

নবগঠিত রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েই জীবনে প্রথম মন্ত্রী হওয়া সুরঞ্জিত বলেছিলেন, রেলে দুর্নীতির ‘কালো বিড়ালটি’ তিনি খুঁজে বের করতে চান। পাঁচ মাস বাদে তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে জড়িয়ে গেল ‘দুর্নীতির ঘটনাই’।

দেড় দশক আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া সুরঞ্জিত জরুরি অবস্থার সময় ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনার সরকারে শুরুতে ঠাঁই পাননি।

‘সংস্কারপন্থী’ অন্য নেতা আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদের মতো দলের নীতি-নির্ধারণী কমিটির সদস্যপদও ‘হারাতে’ হয় সুরঞ্জিতকে।

তবে দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির এই সদস্য এই সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পর সরকারের দুই বছর বাকি থাকতে মন্ত্রী হন।

মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রেনসংখ্যা বাড়ানো এবং ট্রেন সময় ধরে চালানোর ক্ষেত্রে উন্নতির দাবি করে আসা সুরঞ্জিত পদত্যাগের সংবাদ সম্মেলনের পর রেলভবনের ষষ্ঠ তলার সভাকক্ষে দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বিদায়ী বৈঠক করেন।

সেখানে তিনি গত কয়েক মাসে ‘অর্জিত’ রেলের গতি ধরে রাখার জন্য কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান। অন্যদিকে কর্মকর্তারা বিদায় জানান তাদের মন্ত্রীকে।

দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের জন্য রেলভবনে গিয়ে পড়ন্ত বিকালে পতাকাহীন কালো রঙের একটি জিপে করে ওই ভবন ছাড়েন সুরঞ্জিত, শপথ নেওয়ার পর যিনি নিজের পরিচয় দিতেন, ‘শেষ বেলার মন্ত্রী’।